১০৪. Wireless set ( বেতারযন্ত্র ). Type of wireless set কত প্রকার ও কি কি ।
বেতারযন্ত্র কাকে বলেঃ
যে
যন্ত্রের মাধ্যমে তার বিহীন তড়িৎ চৌম্বকীয় তরঙ্গ ব্যবহার করে তথ্য বা
সংবাদ প্রেরণ ও গ্রহন করা হয় তাকে বেতারযন্ত্র বলে। ১৮৯৬ সালে ইতালির উদ্ভাবক গুলিয়েলমু মার্কুনি বেতার যন্ত্র আবিষ্কার করেন ।
বেতারযন্ত্র সাধারণত দুই
প্রকার যথাঃ
যে বেতার যন্ত্র গুলো নির্দিষ্ট স্থানে রেখে বা কোন নির্দিষ্ট বস্তুর উপর রেখে যোগাযোগ সম্পন্ন করা হয় তাকে fixed বেতারযন্ত্র বলে । এ ধরনের বেতারযন্ত্র সাধারণত জেলা সদর, থানা, ফাড়ি, ক্যাম্প, হাইওয়ে পুলিশ ফাড়ি এবং বিভিন্ন প্রকার গাড়িতে ব্যাবহার করা হয় । এ সকল বেতারযন্ত্রের মাধ্যমে সর্বোচ্চ ৬০ কিঃ মিঃ দূরে যোগাযোগ করা যায় । এ ধরনের বেতার যন্ত্রের পাওয়ার সাপ্লাই বিদ্যুৎ অথবা হেভী ডিউটি ব্যাটারীর মাদ্যমে দেওয়া হয়।
যে বেতার যন্ত্র গুলো ওজনে হালকা হাতে বহনযোগ্য ও হেঁটে হেঁটে কথা বলা যায় তাকে walkie-talkie বেতার যন্ত্র বলে । এ সকল বেতারযন্ত্রের মাধ্যমে আমরা ৫ কিঃ মিঃ হতে ১০ কিঃ মিঃ দুরুত্বে যোগাযোগ করা যায় । বর্তমানে রিপিটার স্থাপনের মাধ্যমে এর দুরুত্ব ২৫-৩০ কিঃ মিঃ এ উন্নতী হয়েছে ।
ফিক্সড বেতারযন্ত্র ব্যবহারের নিয়মাবলীঃ-
১.বেতারযন্ত্র চালু করার পূর্বে এর এন্টেনা ও ফিডার কেবল সঠিক ভাবে লাগানো আছে কিনা দেখে নিতে হবে।
২. মাইক্রোফোন জ্যাক এ মাইক্রোফোন সঠিক ভাবে লাগাতে হবে।
৩. বিদ্যুৎ দ্বারা বেতারযন্ত্রটি চালু করতে হলে কড বা তার পাওয়ার সাপ্লাই ইউনিট এর সাথে সঠিক ভাবে লাগাতে হবে এবং প্রথমে পাওয়ার সাপ্লাই ইউনিট চালু করতে হবে পরে বেতারযন্ত্র চালু করতে হবে ।
৪. ব্যাটারী দিয়ে বেতারযন্ত্র টি চালু করতে হলে অবশ্যই ব্যাটারীর নেগেটিভ এবং পজিটিভ টার্মিনালে বেতারযন্ত্রের কড বা তার সঠিক ভাবে সংযোগ দিতে হবে ব্যাটারীতে উল্টাপাল্টা কানেকশন দিলে বেতারযন্ত্রটি নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
৫. পজেটিভ টার্মিনাল সব সময় লাল রং অথবা (+) চিহ্নিত থাকে নেগেটিভ টার্মিনাল নীল/কালো/সবুজ ইত্যাদি রঙ্গের অথবা (-) চিহ্নিত থাকে ।
৬. আকাশে মেঘ দেখা দিলে বজ্রপাত শুরু হওয়ার আগেই বেইজ স্ট্রেশন কে অবগত করে বেতারযন্ত্রটি বন্ধ করে দিতে হবে এবং অবশ্যই বেতারযন্ত্র হতে এন্টিনা কানেকশন খুলে ফিডার লাইন এর মাথা নিরাপদ দূরত্বে রাখতে হবে তা না হলে বজ্রপাতের ফলে বেতারযন্ত্রটি নষ্ট হয়ে যেতে পারে ।
৭. বজ্রপাতের সময় পাওয়ার সাপ্লাই ইউনিট এর সুইচ অফ করে ফ্লাক খুলে রাখতে হবে।
৮. বেতার যন্ত্রের মাধ্যমে এক টানা ২০ সেকেন্ড এর বেশি সময় ধরে কথা বলা যাবে না এতে বেতার যন্ত্রের ক্ষতি হতে পারে।
৯. বেতারযন্ত্রে কোন সমস্যা দেখা দিলে ব্যবহারকারীকে নিজ ইউনিটের ওসি বেতার এর নিকট লিখিত প্রতিবেদন সহ বেতার যন্ত্রটি জমা দিতে হবে।
১০.যেকোনো বেতারযন্ত্র দুর্ঘটনায় হারানো বা ভেঙে গেলে তাৎক্ষণিকভাবে এসপি (এডমিন এন্ড টেলিকম) কে জানাতে হবে এবং পরবর্তীতে কারণ উল্লেখ সহ যতদূর সম্ভব দ্রুত প্রতিবেদন দিতে হবে।
ওয়কিটকি বেতারযন্ত্র ব্যাবহারের নিয়মাবলী
নিম্নে আলোচনা করা হলঃ
১. বেতারযন্ত্র চালু করার পূর্বে ব্যাটারি অবশ্যই পূর্ণ চার্জ করে ব্যবহার করতে হবে ।
২. বেতারযন্ত্রের এন্টেনা এবং ব্যাটারি সঠিক ভাবে লাগাতে হবে ।
৩. একটানা ১৫ সেকেন্ডের বেশি সময় কথা বলা যাবে না এতে বেতারযন্ত্রের ক্ষতি হতে পারে ।
৪. কথা বলার সময় ওয়াকি টকি বেতারযন্ত্র মুখ হতে ৬" ইঞ্চি দূরে এবং ৪৫° ডিগ্রি কোণে নিচের দিকে রেখে কথা বলতে হবে ।
৫. কোন বেতার যন্ত্র যদি ১৫ দিনের অধিক সময় ব্যবহার করা না হয় তাহলে অবশ্যই পাথমিক চার্জকৃত বেতারযন্ত্রের ব্যাটারি ১৫ দিন পর পর চার্জ করতে হবে কারণ একবার চার্জ করা ব্যাটারি দীর্ঘদিন চার্জ না করলে এর চার্জ নেওয়ার ক্ষমতা লোপ পাবে অনেক ক্ষেত্রে একেবারেই চার্জ নেবে না ।
৬. ব্যাটারি চার্জারের ফ্ল্যাগ যাতে শক্তভাবে সকেটের সাথে লেগে থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে ফ্ল্যাগ সকেট এর সাথে ডিলা ভাবে লাগলে স্পার্ক করে ব্যাটারি চার্জার নষ্ট হয়ে যাবে। মাঝে মাঝে ব্যাটারির কন্টাক পয়েন্ট সিরিজ কাগজ দিয়ে হালকাভাবে পরিষ্কার করতে হবে । তবে ছুরি বা চাকু ব্যবহার করা যাবে না ।
৭.বেতারযন্ত্রের কোন সমস্যা দেখা দিলে ব্যবহার কারীকে নিজ ইউনিটের ওসি বেতার এর নিকট লিখিত প্রতিবেদনসহ বেতার যন্ত্রটি জমা দিতে হবে ।
৮. সব সময় মনে রাখতে হবে এটি মূল্যবান সরকারি সম্পত্তি সকল ব্যবহারকারী নিজ দায়িত্বে এর রক্ষণাবেক্ষণ নিশ্চিত করবে ।
বেতারযন্ত্রের সাধারণ দুষক্রটি
ও প্রতিকারঃ
দোষক্রটির বিবরণ
|
দোষক্রটি
প্রতিকার
|
০১. বেতারযন্ত্রের
ফিউজ নষ্ট হইতে পারে ।
|
০১. ফিউজ চেক করিয়া
দেখিতে হইবে এবং ফিউজ ঠিক না থাকিলে বা নষ্ট থাকিলে নতুন ফিউজ লাগানোর ব্যাবস্থা
করিতে হইবে ।
|
০২. ব্যাটারীর সাপ্লাই
লিড ছেড়া থাকিতে পারে ।
|
০২. ব্যাটারীর সাপ্লাই
লিড চেক করিয়া দেখিতে হইবে এবং কোন ছেড়া থাকিলে মেরামত করার ব্যবস্থা করিতে হইবে
অথবা নতুন সাপ্লাই লিড লাগাতে হইবে ।
|
০৩. সাপ্লাই লিড
এর সহিত লাগানো crocodile clip অপরিস্কার থাকিতে পারে ।
|
০৩. সাপ্লাই লিড
এর সহিত লাগানো crocodile clip পরিস্কার করিয়া লাগাতে হবে অথবা নতুন crocodile
clip লাগাতে হবে ।
|
০৪. ব্যটারী ডিসচার্জ
থাকিতে পারে ।
|
০৪. ব্যটারী চার্জের
ব্যবস্থা করিতে হবে ।
|
০৫. বেতারযন্ত্র
হতে ফিডার কানেক্টর খুলিয়া যাইতে পারে বা ঢিলা থাকিতে পারে ।
|
০৫. ফিডার কানেক্টর
সেটের সহিত ভালভাবে যুক্ত করতে হবে ।
|
০৬. এন্টেনা সংযোগ
ঢিলা হতে পারে ।
|
০৬. এন্টেনা সেটের
সাথে ভাল ভাবে সংযোগ দিতে হবে ।
|
০৭. বেতারযন্ত্রের চ্যানেল নির্ধারীত স্থানে না থাকিয়া অন্য স্থানে থাকিতে পারে ।
|
০৭. নিদিষ্ট স্থানে
চ্যানেল স্থাপন করিতে হইবে।
|
০৮. ভলিউম কন্ট্রোল
সুবিধামত স্থানে নাও থাকিতে পারে ।
|
০৮. সুবিধামত স্থানে
ভলিউম কন্ট্রোল স্থাপন করিতে হবে ।
|
কি
কি কারণে বেতার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হতে পারে । বেতার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হলে ওসি বেতার
হিসাবে আপনি কি কি ব্যবস্তা গ্রহন করিবেন ।
কোন ষ্টেশনে বেতার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হলে নিম্ন লিখিত কারণ গুলি পরিলক্ষিত
হতে পারে ।
১.
মাইক্রোফোন
খারাপ
থাকলে
TX হবে
না
।
২.
ব্যাটারী
দুর্বল
থাকলে
TX হবে
না
তবে
RX হবে
।
৩.
এন্টিনা
সংযোগ
ঠিকমত
না
হলে
TX এবং
RX হবে
না
।
৪.
সেটের
স্পীকার
লাইন
খারাপ
থাকলে
RX হবে
না
।
৫.
সেটে
সর্ট
সার্কিট
পরিলক্ষিত
হলে
।
৬.
কোন
কারনে
বেতারযন্তে্র
মধ্যে
পানি
প্রবেম
করলে
।
৭.
আকাশে
আবাহাওয়া
খারাপ
থাকলে
সংগত
কারনে
বেতার
যোগাযোগ
বন্ধ
রাখতে
হবে
।
৮.
যথাযথ
ভাবে
বেতার
মাষ্ট
স্থাপন
করা
না
হলে
।
৯.
স্থাপনের
ক্রটির
কারণে
।
১০.
ব্লক
হওয়ার
কারনে
।
১১.
ইচ্ছাকৃত
ভাবে
বন্ধ
রাখিলে
।
১২.
ফিডার
ক্যাবল
পেচানো
অবস্থায়
থাকলে
।
১৩.
বজ্রপাতের
কারনে
এন্টিনা
নষ্ট
হয়ে
গেলে
।
১৪.
বজ্রপাতের
কারনে
বেতারযন্ত্র
নষ্ট
হয়ে
গেলে
।
১৫.
বেতারযন্ত্র
মেজেতে
আছড়াইয়া
পড়লে
।
১৬.
বেতারযন্ত্রের
প্রোগ্রাম
নষ্ট
হয়ে
গেলে
।
১৭.
রিপিটার
যথাযথ
ভাবে
RX এবং
TX না
হলে
।
উপরে উল্লেখিত সমস্যা সমূহ দেখা দিলে প্রাথমিক
সমস্যা গুলি নিজে নিজে সারানোর চেষ্টা করতে হবে । প্রয়োজনে ওয়ার্কশপ থেকে RM অথবা
MM মেকানিক এনে সারাতে হবে। যদি গুরত্বর সমস্যা হয় তাহলে, এসকর্ট পার্টির মাধ্যমে
নিকটস্থ রেঞ্জ অথবা সেন্টাল ওয়ার্কশপে বেতারযন্ত্রটি প্রেরন করতে হবে ।প্রয়োজন বোধে
বেতার মাষ্টের মালামাল সংগ্রহ পূর্বক দ্রুতগতিতে বেতার মাষ্ট স্থাপন করতে হবে ।
বেতার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকা কালীন টেলিফোন, ফ্যাক্স, অথবা ডাটা বেজ কানেক্শন
নীতিমালা অনুস্বরণ করতে হবে ।এছাড়াওঃ
১. জেনারেল ডায়রী করতে হবে ।
২. উর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানাতে হবে ।
৩. জরুরী বার্তা থাকলে প্রেরককে জানাতে হবে ।
৪. ছোটখাট সমস্যা থাকলে নিজে নিজে সমাধার চেষ্টা করতে হবে ।
৫.সমস্যা সমাধা করতে না পারলে ওয়ার্কশপে বার্তা প্রেরণ করে মেকানিক চাইতে
হবে ।
Comments